Posts

সংকলন ৪১- অন্তহীন ভালোবাসা

লেখা : অস্পষ্ট আমি ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং নিলয় এর ফোনটা বেজেই চলেছে। নীলাদ্রি সে কখন থেকে করেছে তো করছেই। সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপই নেই নিলয়ের। আজ নীলাদ্রি জন্মদিন সেটা নিলয় জানে। নীলাদ্রি ভেবেছে নিলয় ভুলে গিয়েছে তাই বারবার ফোন করছে। নিলয় এখন নিরব কে খুঁজছে। কারণ নীলাদ্রি তার জন্মদিনের অনুষ্ঠান এ নিলয় কে যেতে বলেছে। আর নিলয় এর কাছে একটা টাকাও নেই যে ওর জন্মদিনে কিছু উপহার দিবে। নিলয় ভাবছে নীলাদ্রির বাবা ওর জন্মদিনের জন্য কত বড় পার্টি দিয়েছে। আর সেই পার্টিতে দাওয়াত দিয়েছে নিলয় কে। কিন্তু নিলয়ের কাছে এখন কোন  টাকাপয়সা নেই। থাকবে কি করে? নিলয় তো বেকার একজন ছেলে। পড়াশুনা শেষ করেছে বছর দুইএক হয়। কিন্তু এতদিনেও কোন চাকরী পায় নি নিলয়। পাবে কি করে? নিলয়ের তো আর মামা চাচার জোর নেই যে মামা চাচা গিয়ে বলবে আর ওর চাকরী হয়ে যাবে। নিলয় বসে ওদের সম্পকের কথা ভাবছে। নীলাদ্রির সাথে নিলয়ের সম্পর্ক ৪ বছরের। তাদের প্রথম দেখাটাও ছিলো অদ্ভুদ ভাবে। তখন ছিল বর্ষাকাল। কিছুক্ষণ পর পরেই অঝর ধারায় বৃষ্টি পরতো আকাশের বুক থেকে। তেমনি একটা দিনের সকালের কথা। নিলয় ভার্সিটি তে যাওয়ার জন্য বের হয়...

সংকলন ৪০- ভালবাসি তোকে..

লেখা: আবির আয়নার সামনে বসে নিজেকে বার বার দেখে নিচ্ছে নিধি। কাজল টা ঠিকমত দেওয়া হয়েছে তো, চুল গুলো ঠিক আছে তো! হ্যাঁ, সব ঠিক। একদম পারফেক্ট। গাঢ় করে কাজল দিয়েছে আজ নিধি। নীল জামাটাও অনেক মানিয়েছে। হাত ভর্তি চুড়িও পরেছে । সব মিলিয়ে খুবই সুন্দর লাগছে আজ নিধিকে। আজ প্রত্যয় এর সাথে দেখা করতে যাবে নিধি। আজ ওদের প্রথম দেখা। তাই নিধি এমন সেজেছে। প্রত্যয় আজ নিধিকে প্রোপোজ করবে। নিধিও প্রায় রাজি। প্রায় এক মাস আগে ওদের ফোনে পরিচয়। কথা বেশী হয়নি। SmS এই সাড়াদিন চ্যাট হয়। অপরিচিত ছেলেটিকে নিধির কেন যেন খুব পরিচিত মনে হয়। প্রত্যয় নিধির ঠিক মনের মত একটা ছেলে। এই কয় দিনে একজন আরেক জন এর খুব আপন হয়ে গেছে। প্রত্যয় এর সাথে নিধি রিলেশন করতে চাচ্ছে অনেকটা তীর্থ'র উপর রাগ করে। তীর্থ নিধির বেস্ট ফ্রেন্ড। সেই কলেজ লাইফ থেকে ভার্সিটির এই থার্ড ইয়ার পর্যন্ত তারা একসাথে ছায়ার মত। একজন ক্লাসে না গেলে আরেক জনও যেত না। সুখে দুখে একসাথে। ওদের বন্ধুত্ব দেখে অন্যদের হিংসা হত। একদিন সব বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিচ্ছে। হঠাৎ করে তীর্থ নিধির কানে কানে বলল -"ভালবাসি তোকে" : কি...

সংকলন ৩৯- ফেসবুক প্রেম,অতঃপর করুণ পরিণতি(সত্য ঘটনা অবলম্বনে )

লেখা : Cloudy sky (এফ এ তারেক ) . রাত তিনটা , কে যেন দরজায় কড়া নাড়ছে । ঠক ঠক . . . ঠক ঠক . . . . কে ? ? . মাশুক ভাই আমি ছগির ( কেয়ারটেকার ) । . এত রাতে কি চাও ? ? . একটা উপহার আছে আপনার জন্য ! দরজা খুললেই দেখতে পাবেন ! (মাশুকের মেজাজ একদম বিগড়ে গেছে ! দরজা খুলেই ছগির ব্যাটাকে কষে একটা চড় লাগাতে হবে ! ব্যাটা এই রাত- দুপুরে ফাইজলামি শুরু করছে ) . দরজা খুলে মাশুক হ্যাঁ করে তাকিয়ে আছে । ছগির যেন উল্টো তার গালেই চপেটাঘাত করলো ! ছগিরের পাশে এটা কে ! ! . ফেসবুকের একটা জনপ্রিয় পেজে মাত্রই একটা গল্প শেয়ার হল । গল্পটা মাশুকের খুবই ভাল লাগল , তাই সে কমেন্টে লেখককে ধন্যবাদ জানাল । লেখকও সাথে-সাথে কমেন্টের রিপ্লাই দিলেন । কয়েক মিনিটের মধ্য আরো কয়েকজন পাঠক যোগ দিলেন সেখানে । জমে উঠলো কমেন্ট পাল্টা-কমেন্ট খেলা । এক পর্যায়ে মাশুক খেয়াল করলো "গোধূলির আলো " নামে কেউ একজন তাকে ম্যানশন করেছে । মাশুকও পাল্টা ম্যানশন করলো , এবং এক ফাঁকে আইডিটা ঘুরে আসলো । ছবি দেখে মেয়েটাকে ভালই লাগলো মাশুকের , তাই কোন কিছু না ভেবেই রিকু দিয়ে দিল । মেয়েটাও সাথে সাথে রিকুটা এক্...

সংকলন ৩৮- সেই রাতটির স্মৃতী

লেখাঃ 'Abid Ahmed Chowdhury - ৩০'শে ডিসেম্বর ২০১৩, ভোর রাত ৪.০০ টা! আমার রুমে বসে কম্পিউটারে কিছু একটা কাজ করতেছি, এমন সময় পাশের রুম থেকে আব্বুর মোবাইলে রিং বেজে উটলো। এত রাতে হঠাৎ করে কে ফোন দিল, মনের মধ্যে একটা বিষ্ময়ের সৃষ্টি হল। একটু কান দিলাম, বুঝতে পারলাম ফোনটা রিসিভ করতেই আব্বু বিছানা থেকে উঠে গেছেন। একটু আতঙ্কিত হয়ে উঠে গিয়ে দরজাটা খুললাম... - "আব্বু কি হয়েছে?" - "তর চাচা ফোন দিয়েছেন, তর চাচির অবস্থা ভালো না, ব্যাথাটা বেড়ে গেছে, তাড়াতাড়ি যেতে হবে...!" চাচিরা আমাদের বাড়ি থেকে একটু দূরে থাকেন, আজ ২৭ দিন হল উনার ডেলিভারী হয়েছে, উনার একটা বড় ছেলে আছে, বয়স ১২ বছর, আরেকটা সন্তানের অনেক ইচ্ছে ছিল কিন্তু আগের বার সিজার করে তার প্রথম ছেলের জন্ম হওয়ায় ডাক্তারী ভাবে কিছু একটা সমস্যা হয়, প্রায় ৩ বার বাচ্চা নষ্ট হয়। বিগত কয়েক বছর থেকে অনেক কান্নাকাটি আর শোকাবহ অবস্থা ছিল তার, অবশেষে অনেক দোয়া-দুরুদ করে আল্লাহতালার অশেষ মেহেরবাণীতে এই মাসের ৩ তারিখে আবারো সিজার করে আরেকটি ফুটফুটে সন্তানের জন্মদেন তিনি। কিন্তু ডেলিবারীর পর থেকে প্রায় নি...

সংকলন ৩৭- টাকা থাকলেই সুখি হয় না

লেখকঃ Rabby Mondol (অস্থির পোলা) তিন বোনের পরে জন্ম নিল রাহাত অনেক আদরের ছেলে রাহাত। বোনেরা তাকে অনেক ভালবাসে। তবে তিন বোনের ও অনেক আদর। রাহাতের বাবা মা রাহাতের কোন ইচ্ছাই অপুর্ন রাখে না। রাহাতের বাবা রাহাত কে নাম ধরে ডাকে না। রাহাতকে বাবা বলে ডাকে। রাহাত এর বাবা পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি।এবং তাদের অল্প জমিও আছে। জমিতে ফসল ফলিয়ে এবং কাঠমিস্ত্রির কাজ করে তাদের সংসার ভালই চলে। . কিন্তু রাহাতের বাবা বেশিদিন কাঠমিস্ত্রির কাজ করতে পারে না। তার কিছু অসুখ এর কারনে কাঠমিস্ত্রির কাজ বন্ধ হয়ে যায়।তারপরে তাদের জমিতে ফসল ফলিয়ে মোটামুটি চলে সংসার।রাহাতের বাবার ইচ্ছা রাহাতকে ডাক্তারি পরাবে। এবং তার ছেলে মানুষের সেবা করবে। . কিছুদিন পরে তাদের সমস্যার কারনে সব জমি বন্দক রাখতে হয়। তবে কোন রকম চলে তাদের সংসার। রাহাত আর এখন কোন কিছু চায় না বাবা মায়ের কাছে। . এর মধ্যে একটা মেয়েকে ভাল লাগে রাহাতের। মেয়েয়ির নাম মিম। কিন্তু কিভাবে বলবে ভালবাসার কথা। কারন মেয়েটি তার নিকট আত্বিয়। তাই বলতে ভয় পাচ্ছে। যদি মেয়েটি তার মাকে বলে তাহলে রাহাতের অনেক সমস্যা হবে। তবুও বলে মেয়েটিকে ভালবাসা...

সংকলন ৩৬- সাদিয়ার গল্প- রিয়াজুল ইসলাম হৃদয়

১. সাদিয়া ভার্সিটি থেকে এসে বিরক্তি নিয়ে কলিংবেল বাজিয়েই যাচ্ছে কিন্তু ভেতর থেকে দরজা খোলার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। একটু পরেই শোনা গেল বুয়ার গলা। ' দাঁড়ান আম্মা আইতেসি' এতে তার বিরক্তির মাত্রা বেড়ে গেল আরও। সে আগেই বুয়াকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তাকে এসব আজেবাজে নামে যেনো না ডাকে, ম্যাডাম বলে ডাকে। কিন্তু এই মহিলা বরাবরই একই কাজ করে যাচ্ছে! দরজা খোলার সাথে সাথেই- - এই মহিলা কই থাক তুমি? দরজা খুলতে এতক্ষণ লাগে!! - জে আম্মা ভাতের মার গালতেছিলাম। - আমি যে কখন থেকে বাইরে দাঁড়িয়ে আছি সে খেয়াল নাই তোমার? - এইবারের মতন মাফ কইরা দেন আম্মা। আর হইব না। - এই শোন, তোমাকে না কতবার নিষেধ করছি আমাকে আম্মা ডাকতে! যতসব গাইয়া ভূত! ২. বলতে বলতে সিঁড়ির দিকে পা বাড়ায় সাদিয়া। সাদিয়ার পরিচয় আলাদাভাবে দেওয়ার মতো কিছু নেই। ব্যবসায়ী ধনী বাবার একমাত্র দুলালি হলে মেক্সিমাম ক্ষেত্রে যা হওয়ার কথা এখানেও ঠিক তাই। পার্থক্য শুধু তাকে ৪ বছরের রেখে তার মা না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বাবা দ্বিতীয় কাউকে আসতে দেননি। সেই তখন থেকেই সাদিয়ার বুয়ার কাছেই ...

সংকলন ৩৫- পতাকা আর এক যোদ্ধার গল্প

"শত্রু শেষ, যুদ্ধও শেষ, এখন থেকে শুরু হলো স্বাধীন বাংলাদেশ।"- কমান্ডার যখন এই কথাটা বললেন আমি তখন বিশ্বজয়ের খুশীতে আকাশের দিকে তাকালাম। সূর্যটা তখন পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। আমার মনে হলো সূর্যটা আজ কিছুতেই ডুবতে চাইছেনা। বহুযুগের লালিত স্বপ্ন, কোটি বাঙালীর প্রাণের চাওয়া, আজকের এই বিজয়ের আনন্দ সূর্যটাও আমাদের সাথে ভাগ করে নিতে চাইছে। এ বিজয় প্রতিটা বাঙালীর জন্য যে কতটা আনন্দের, কত ত্যাগ, রক্ত আর জীবনের বিনিময়ে অর্জিত সে কথা যেমন ইশ্বর জানেন, জানে প্রতিটা বাঙালী আর জানে পশ্চিম আকাশে ডুবতে বসা ঐ রক্তিম সূর্যটাও। স্রষ্টার বিধানের কাছে নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ডুবে যাবার আগে তাই সূর্যটা ওর সব রক্তিম আলো উজাড় করে দিয়ে গেল চিরসবুজ এই বাঙলার বুকে। সূর্যের রক্তিম আলো আর চিরসবুজ বাঙলার কথা ভাবতেই আমার লাল-সবুজের এক পতাকার কথা মনে পড়লো। যে পতাকার জন্য আমরা এতদিন অধীর অপেক্ষায় ছিলাম। যে পতাকার জন্য আমাদের মধ্যে অনেকে জীবন দিয়েছে, অনেকে সম্ভ্রম দিয়েছে। যার কাছে দেবার মতো যা ছিল সবাই সবটা উজাড় করে দিয়েছে। কেউ কোনা কৃপণতা করেনি। আজ মা-বাবা, আর আমার ছোট বোন মায়ার কথা খুব মনে পড়ছে, সেই সাথে মনে ...